বর্তমেনে আমরা প্রত্যেকে গুগল ম্যাপের সাথে পরিচিত। বলা যেতে পারে তা আমাদের জীবনের সাথে অজানতেই জড়িয়ে পড়েছে। আমরা সাধারণত যদি কোনো অপরিচিত জায়গায় যেতে চায় তবে আমরা আমাদের ফোন বা পিসিতে গুগল ম্যাপ চেক করবো তা নিশ্চিত। কারণ আমার জায়গা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পেতে চাই। এবার একটু অতীতে ফিরে যাওয়া যাক , না বেশি দূরে না মাত্র দুই দশক আগে, তখন যদি আপনার কোনো জায়গা সম্পর্কে জানার ইচ্ছা করত তবে আপনি কি করতেন? নিশ্চই আপনি কাগজের ম্যাপ ব্যবহার করতেন। যেখানে আপনাকে ম্যানুয়ালি কষ্ট করে আপনার আপনার জায়গা খুজে পেতে হতো। তখন বসে হয়তো গুগল ম্যাপের কথা ভাবা একটা অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই হতো না |আর সেই জিনিস বর্তমানে আমরা ব্যবহার করছি কোনো রকম ঝামেলা ছাড়াই। সত্যিই আশ্চর্যজনক। আর সেই মিস্টেরিয়াস জিনিসের সম্পর্কে সামান্য কিছু জানা তো আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যর মধ্যেই পরে , তাই না ?। তো শুরু করা যাক।
আমাদের নিত্যদিনের বহুল ব্যাবহৃত গুগল ম্যাপ কিন্তু রাতারাতি আকাশ থেকে টুপ করে পড়ে আমাদের হাতের মাঝে এসে যায়নি। গুগল ম্যাপকে কিন্ত বিভিন্ন আপডেট এর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে । ওকে , তবে আলোচনা প্রথম থেকেই শুরু করা যাক।
২০০৪ সাল। Where 2 Company, যা ডিজিটাল ম্যাপ অনলাইনে সেবা প্রদান করতো তা কিনে নেয় এবং নিজের কোম্পানির অন্য আরেকটি শাখাই পরিণত করে। তখন সেই হোয়ার টু কোম্পানির মালিক ছিলেন লারস এবং জেনস রাসমুসেন নামক দুই ভাই।
অবশ্য সেসময় আরো কিছু কোম্পানি এরকম সেবা প্রদান করতো। এ জন্য গুগলকে মার্কেট পেতে এমন কিছু করার দরকার ছিলো যা অন্য কোম্পানিগুলোর নেই। এখানেই তারা একটা পথ খুজে পায়। তখনকার ম্যাপ গুলো কে দেখতে হলে ইউজার বার বার ম্যাপ কে রিফ্রেশ করতে হতো, যা সত্যি খুবই বিরক্তিকর |তাই গুগল তাদের নিউ ফীচার যোগ করে যাতে ইউজারকে বারবার রিফ্রেশ করতে না হয়, স্ক্রল করেই যেন দেখতে পায় |গুগল এতে সফল হয়, তারা মার্কেটে তাদের একটি শক্ত জায়গা তৈরি করে নিতে পারে
এরসাথে গুগল আরো একটি কাজ করে তা হলো তাদের স্যাটেলাইটে ডাটা, যা গুগল ইমেজিং সার্ভিস কোম্পানি কিহোল থেকে নিয়েছিল। এছাড়াও তারা বিভিন্ন গাভর্নমেন্ট রিসোর্স থেকে ইমেজ সংগ্রহ করে। এসব স্যাটেলাইট ইমেজ কে কম্বাইন করে গুগল তাদের ম্যাপ একদম অ্যকিউরেট করে তোলে যে আপনি গুগল আর্থ এর মাধ্যমে কোনো জায়গার 3D ভিউ দেখতে পারেন যা দেখতে সত্যি অসাধারণ লাগে।
গুগল ম্যাপ তার ব্যবহারকারীকে বিভিন্ন সেবা প্রদান করে থাকে। তাদের মধ্যে কিছু নিম্নে দেওয়া হলো
1.Google Street View :
গুগল তাদের স্ট্রিট ভিউ পরিসেবা ২০০৭ সালে শুরু করলেও তা শুধু মাত্র ইউনাইটেড স্টেট এর পাঁচটি শহর অন্তর্ভুক্ত ছিলো। তবে বর্তমানে বিশ্বের হাজার হাজার শহর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যখন এটি প্রথম চালু হয় তখন গুগল রাস্তার গাড়ির নম্বর প্লেট এবং মানুষের ফেইস স্পষ্ট দেখা যেত যা নিরাপত্তাজনিত বিতর্কের জন্ম দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে গুগল পরে তাদী অটোমেটিক ফেইস রিকোগনিশনের মাধ্যমে ফেইস ও নম্বর প্লেট ঝাপসা করে দেয়। যা আপনি হয়তো ম্যাপ ইউজ করার সময় খেয়াল করে থাকবেন।
2.Indoor Maps:এটি ২০১১ সালের মার্চ মাসে চালু হয়। যা ব্যবহার করে ইউজার এয়ারপোর্ট, মিউজিয়াম, শপিং মল, ইউনিভার্সিটি ইত্যাদির ভিতরের ম্যাপ অর্থাৎ ভিতরে কোন জায়গায় কি আছে তা দেখতে পারবে। তবে এর জন্য গুগলকে বিল্ডিং এর মালিকের পারমিশন প্রয়োজন।
3.Traffic Update:
চালু হয় ২০০৭ সালে। তবে তা উন্নত দেশগুলোতে উপলব্ধ ছিলো, বাংলাদেশে অনেক পড়ে আসে। এর মাধ্যমে আপনি দেখে নিতে পারেন আপনার গন্তব্যে যাওয়ার রাস্তার ট্রাফিক অবস্থা আর নিতে পারেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
4.Offline Map :
আপনি যদি এমন কোনো জায়গায় যেতে চান যেখানে নেট স্পিড খুবই ধীর গতির বা নেটই নেই তবে আপনি ম্যাপ ডাউনলোড করে নিতে পারেন অফলাইনে দেখার জন্য।যা আপনি নিচের পদ্ধতিতে করতে পারেন –এখানে শুধু গুগলের কয়েকটি সার্ভিস তুলে ধরা হয়েছে। আপনি আরো জানতে চাইলে গুগল করুন অথবা কোনো এআইকে জিজ্ঞেস করুন, আপনি আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন।
শেষ কথা। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত উন্নত এবং নতুন তৈরি হচ্ছে। আমরা যদি এসব থেকে হাত গুটিয়ে নিই তবে একদম পিছনে পড়ে যাবো। তাই আমাদের প্রযুক্তি সম্পর্কে হালকা হলেও জ্ঞান রাখতে হবে। যাতে তাকে কাজে লাগিয়ে আমরা আমাদের কাজকে সহজ করে তুলতে পারি সাথে সময়ও বাঁচাতে পারি।
এটা আমার প্রথম লেখা তাই ভুলত্রুটি স্বাভাবিক না বলে অবশ্যক বলা উচিত। অতএব ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।ধন্যবাদ, সময় নিয়ে পড়ার জন্য।
The post গুগল ম্যাপ নিয়ে কিছু কথা যা জানা উচিত appeared first on Trickbd.com.
0 comments: