Monday, July 29, 2024

আরামদায়ক অফিস চেয়ারের বৈশিষ্ট্য

অনেকে ‘অফিস চেয়ার’ বলে ডাকে, আবার অনেকে ‘সুইভেল চেয়ার’ বলে থাকে। কিন্তু দুটো নাম ভিন্ন হলেও একই অর্থ প্রকাশ করে। বলছিলাম আরামদায়ক অফিস চেয়ারগুলির কথা। বর্তমানে এমন কোনো অফিস পাবেন না যেখানে অ্যাডজাস্টেবল সুইভেল চেয়ার নেই। নান্দনিক ডিজাইনের চেয়ারগুলো অফিস রুমের সৌন্দর্য বাড়ানোর সাথে কর্মীদেরকেও বেশ স্বস্তি দেয়। এরকম অফিস চেয়ারগুলি যদি কখনো না দেখে থাকেন, তাহলে এই ব্লগটি আপনার জন্য। চলুন সহজে জেনে নেই আরামদায়ক অফিস চেয়ার কি এবং এই চেয়ারের কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

আরামদায়ক অফিস চেয়ার বলতে কি বোঝায়?

দীর্ঘসময় বসে কাজ করার উপযোগী চেয়ারগুলিকে অফিস চেয়ার বলে। মূলত এসব চেয়ারে বিভিন্নরকম আরাম করার অংশ ও ফাংশনালিটি দেওয়া থাকে। প্রতিটা চেয়ারে সহজে সরানো থেকে শুরু করে সকল রকমের সুবিধাই পাবেন। অফিসের বস, নির্বাহী কর্মকর্তা, কর্মী ও রিসেপনিস্টদের রুমের অফিস চেয়ার ডিজাইন ভিন্নরকমের হয়। একটু বেশি দামী অফিস চেয়ারগুলি ভেঙে সোজা করে খাটের মত শুয়ে থাকা যায়। 

আসলে বিশ্রামের এত উপায় থাকার জন্যই এদের নামের পাশে ‘আরামদায়ক’ জুড়ে রাখা হয়। নরম ম্যাটেরিয়েলের প্যাডিং ও কুশনিং চেয়ারগুলোকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। ভাল কোম্পানিগুলো বীচ উড, ক্রোম বেজড মাইল্ড স্টীল ও মাইক্রো ফ্যাব্রিক দিয়ে মোলায়েম চেয়ার বানিয়ে থাকে। তবে ব্যবহার করতে নরম মনে হলেও চেয়ারগুলো গুণগত মানে বেশ মজবুত ও টেকসই হয়।

আরামদায়ক অফিস চেয়ারের কি কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে?

একেকটা অফিস চেয়ার বা সুইভেল চেয়ার বিভিন্নরকম ডিজাইনের হয়ে থাকে। সহজে অ্যাডজাস্ট করার মেকানিজম ও চাকার ব্যবহার চেয়ারগুলোকে একটু বেশিই ব্যবহার বান্ধব করে তুলেছে। এসব চেয়ারে কনুই ও দরকারি জিনিসপত্র রাখার জন্য বিশেষ জায়গা ও থাকে। চলুন এবার এসকল গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বিস্তারিতভাবে জেনে নিইঃ

১. নিত্যনতুন ডিজাইনের চেয়ার থাকা

আরামদায়ক চেয়ারগুলিতে ডিজাইনের কোনো শেষ নেই। হালের মডার্ন চেয়ারগুলো মডুলার টাইপের হয়ে থাকে। তাই অফিসের ইনটেরিয়র উন্নত করতে এগুলো বেশ অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। সোজা, বাঁকা, বড়, ছোট, সবরকমের ডিজাইন মিলিয়ে চেয়ারগুলো এতটা আলাদা ব্যক্ত্বিত্ব প্রকাশ করে। বসা পরের কথা, চেয়ারগুলো দেখেই যেকেউ মুগ্ধ হয়!

২. সহজে অ্যাডজাস্ট করার ব্যবস্থা

অফিস চেয়ারের মূল বৈশিষ্ট্য হলো এতে উচ্চতা, প্রশস্ততা, কৌণিক দূরত্ব সবকিছু নিজের সুবিধামত সেট করে নেওয়া যায়। তাই যেকেউই এতে বসতে পারবে, সে হোক খুব চিকন অথবা খুব মোটা। চেয়ারের ধারণক্ষমতাও অনেক বেশি, তাই সহজে বেঁকে যাওয়া বা ভেঙে যাবার মত পরিস্থিতির তৈরি হবেনা।

৩. চাকার মাধ্যমে পরিবহনের ব্যবস্থা

প্রায় সব অফিস চেয়ারে চাকা লাগানো থাকে। এতে করে সহজে সহকর্মীদের কাছে যাওয়া যায়। ফলে চেয়ার থেকে ওঠা, চেয়ার সরানো এসব কাজে সময় নষ্ট হয়না। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, অফিসে কোনো প্রোগ্রাম থাকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই একজন বা দুজন মানুষ সব চেয়ার এক রুম থেকে অন্য রুমে নিয়ে যেতে পারবে। 

৪. কনুই ও হাত রাখার জায়গা

ডিজাইন অনুযায়ী আরামদায়ক চেয়ারে হাত রাখার বিশেষ জায়গা থাকে। তাই কম্পিউটারের কীবোর্ডে কিছু লেখার সময় হাত ব্যথা হয়না। কিছু চেয়ার আরো এক ধাপ উপরে! এগুলোতে হাতের পাশাপাশি কলম, ফোন, নোটবুক ইত্যাদিও রাখা যায়। বড় মাপের চেয়ারগুলি তো আপনাকে ডিভান সোফার কথা মনে করিয়ে দেবে। কিছু চেয়ারে সোফার মতই ফোম, লেদার ও কার্বন ফাইবারের সাপোর্ট প্লেট থাকে। 

৫. উজ্জ্বল রঙ

একেকটা অফিসের থিম একেকরকম হয়। তাই অফিস চেয়ারগুলো সবরকম পরিবেশে মানানসই হবার মত বানানো হয়। পুরনো অফিসগুলোতে কমলা বা চামড়ার মত রঙের চেয়ার বেশি ভাল লাগে। আবার নতুন অফিসগুলোতে চকোলেট, সাদা ও কালো চেয়ারগুলো দেখতে ছিমছাম লাগে। নির্মাতা কোম্পানি আপনাকে একই মডেলের চেয়ার বিভিন্ন রঙের দিতে পারে।

আরামদায়ক অফিস চেয়ারে বসার উপকারিতা কি কি?

যেহেতু অফিস চেয়ারগুলোর দাম সাধারণ চেয়ারের থেকে কিচুটা বেশি, তাই এতে অবশ্যই বেশি উপযোগীতা আছে। এসব চেয়ারে বসলে শারীরিকভাবে বেশি সুস্থ সবল থাকা যায়। আর সময় বাঁচানো বা ইনটেরিয়র সাজানোর কথা তো না বললেই নয়।

  • নিরাপত্তা নিশ্চিত করাঃ চেয়ারগুলো বিভিন্ন পজিশনে সেট করা যায় বলে যার যার শারীরিক গঠন অনুযায়ী বসা যায়। এতে মেরুদন্ডে ব্যথা হওয়ার মত মারাত্বক কোনো সমস্যা থেকে ঝুকিমুক্ত থাকা যায়। নির্মাতা কোম্পানিগুলো অনেকরকম টেস্ট করে ডিজাইন করে থাকে। তাই বাজারের সাধারণ চেয়ারের চেয়ে অফিসের চেয়ারে বসতে বেশি স্বস্তি ও নিরাপদ অনুভূত হবে।
  • সময় বাঁচানোঃ আগেই বলেছি যে, আরামদায়ক চেয়ারে চাকার মাধ্যমে পরিবহনের ব্যবস্থা থাকে। এতে একটা বিশাল পরিমাণ সময় বেঁচে যায়। সহকর্মীরা কাজ করার সময় মুহূর্তেই একজন আরেকজনের টেবিলে গিয়ে আবার ফিরে আসতে পারে। বর্তমানে অটোমেটেড চেয়ার না থাকলেও খুব শীঘ্রই ব্যাটারি চালিত স্মার্ট চেয়ার আসতে পারে।
  • ইনটেরিয়র সাজানোঃ ঘর সাজাতে যেরকম বিভিন্নরকম চেয়ার আছে, তেমনি অফিস সাজাতে অফিস চেয়ারের বিকল্প নেই। ঝলমলে রঙ, নকশা ও ফাংশনালিটির সমন্বয়ে চেয়ারগুলো রুমের সৌন্দর্য বেশ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। করপোর্টে অফিস থেকে ভিডিও স্টুডিও, সবরকম পরিবেশেই অফিস চেয়ার মানানসই হয়।

আরামদায়ক অফিস চেয়ারগুলোর দাম কেমন হয়?

আপনি ভালো কোম্পানির শো রুম বা ওয়েবসাইট থেকে অফিস চেয়ার কিনলে ৯ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। চেয়ারের দাম ডিজাইন, ম্যাটেরিয়েলের পরিমাণ, পরিমাপ ইত্যাদি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। অনেকে সাধারণ দোকানে অর্ডার করে কমদামে চেয়ারগুলো বানায় যা কয়েকদিন পর বিকল হয়ে যায়। দীর্ঘস্থায়ী সমাধান পেতে হলে গুগলে ‘office chair price in bangladesh’ খুঁজে রেপুটেড কোম্পানির ওয়েবসাইট ও স্টোর থেকে কেনা ভাল হবে।

পরিশেষ

তো এই ছিল আজকের ব্লগের মূল বিষয়। আরামদায়ক অফিস চেয়ারের জনপ্রিয়তা এত বাড়ছে যে অনেকে স্টাডি রুম বা গেমিং রুমেও এ ধরনের চেয়ার ব্যবহার করছে। আপনি এ ধরনের চেয়ার কিনেলে অবশ্যই আমাদের বলা বৈশিষ্ট্যগুলির সাথে মিলিয়ে নিবেন। তাহলে কম মূল্যে সবচেয়ে চেয়ার পেয়ে যাবেন। 

আরামদায়ক অফিস চেয়ার নিয়ে কিছু বহুল আলোচিত প্রশ্ন-উত্তর

সারাদিন বসে থাকার জন্য কোন ধরনের অফিস চেয়ার গুলো ভাল হবে?

সারাদিন বসে থাকতে এমন চেয়ার লাগবে যা কোনোরকম ঝামেলা ছাড়া অ্যাডজাস্ট করা যায়। অনেক্ষণ একই অবস্থায় বসে থাকলে শরীরের রক্ত সঞ্চালনসহ অস্থিজনিত সমস্যা হতে পারে। তাই চেয়ারে অবশ্যই দ্রুত পজিশন অ্যাডজাস্ট করার ব্যবস্থা থাকা চাই। আবার শরীরে অতিরিক্ত চাপ এড়ানোর জন্য চেয়ারে ফোম ও নরম কাপড়ের কভার থাকলে ভালো হবে। 

আরামদায়ক চেয়ারে বসার সময় কি কি সাবধানতা নিতে হবে?

অনেকসময় সেন্টার অব গ্রাভিটির না মেলার কারণে চেয়ার উল্টে পড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই সকলেরই সাবধানে চেয়ারে বসা উচিৎ। চেয়ার সড়াতে গেলে আপনার পায়ের আঙুলের উপর চাকা উঠে যায় কিনা খেয়াল রাখতে হবে। অনেকসময় চাকার নিচে ছেঁড়া কাপড়, কাগজ বা হেডফোনের তার আটকে চেয়ার উল্টে যেতে পারে। তাই বড় দূর্ঘটনা এড়াতে নিজের রুম পরিষ্কার রাখা ও বেশ কাজে দেয়।

কিভাবে আরামদায়ক অফিস চেয়ার পরিষ্কার রাখা যায়?

আরামদায়ক অফিস চেয়ার পরিষ্কার রাখা খুবই সহজ। আধুনিক অফিস চেয়ারে উপকরণ হিসেবে ফোম, লেদার, কার্বন ফাইবার, স্টিল, প্লাস্টিক ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তাই কাঠের চেয়ারের মত খুব বেশি ময়লা পড়েনা। পাশাপাশি, চেয়ারের সব ম্যাটেরিয়েল হালকা ভিজে কাপড় দিয়ে মুছে শুকিয়ে ফেলা যায়। তাই বাতাসের আর্দ্রতা কোনো ক্ষতি করতে পারেনা। বিভিন্ন অংশের ঝুলিকালি বা মাকড়সার জাল হলে সহজ চেয়ার খুলে পরিষ্কার করা যায়।

The post আরামদায়ক অফিস চেয়ারের বৈশিষ্ট্য appeared first on Trickbd.com.


Previous Post
Next Post
Related Posts

0 comments: