পরিচিতি
পাইথন একটি ডায়নামিক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ যেটি জয় করেছে বহু ডেভেলপারের হৃদয় । এর মধ্যে আছে গুগল, ড্রপবক্স, ইন্সটাগ্রাম, মোজিলা সহ অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের হাজারো প্রকৌশলী । পাইথন এমন একটি ভাষা যার গঠন শৈলী অনন্য এবং প্রকাশভঙ্গি অসাধারণ । চমৎকার এই ল্যাঙ্গুয়েজটি তাই আজ ছড়িয়ে পড়েছে নানা দিকে – ওয়েব, ডেস্কটপ, মোবাইল, সিস্টেম এ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সাইন্টিফিক কম্পিউটিং কিংবা মেশিন লার্নিং – সবর্ত্রই পাইথনের দৃপ্ত পদচারণা।
আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে – Django, Flask, Tornado ইত্যাদি ফ্রেমওয়ার্ক এর মাধ্যমে ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট করতে চাইলে পাইথন জানা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আবার ডেস্কটপ বা গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেইস সমৃদ্ধ সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের জন্য পাইথন প্রোগ্রামিং এর জ্ঞানকে ব্যবহার করা যাবে PyQT এর মত টুলকিট বা Tkinter এর মত প্যাকেজ এর সাথে। আরও আছে Kivy এর মত লাইব্রেরী।
বর্তমানে বহুল আলোচিত এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তির ভিত্তি ডাটা সায়েন্স এবং মেশিন লার্নিং, সর্বোপরি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কাজ করতে চাইলে পাইথন হতে পারে নির্দ্বিধায় প্রথম পছন্দের প্ল্যাটফর্ম। কারণ, scikit-learn এর মত মেশিন লার্নিং লাইব্রেরী, Pandas এর মত ডাটা ফ্রেম লাইব্রেরী, Numpy এর মত ক্যালকুলেশন লাইব্রেরী যেগুলো এক কথায় অনন্য- এসবই আছে পাইথনের জন্য।
সিরিয়াস লোকজন ইন্টারনেট অফ থিংস নিয়ে কাজ করতে চাইলেও রাস্পবেরি-পাই, বা এরকম হার্ডওয়্যার প্ল্যাটফর্ম গুলোর সাথে পাইথনের কম্বিনেশন হতে পারে চমৎকার। আছে RPi.GPIO. আর মজার লোকজনের গেম ডেভেলপমেন্ট এর জন্য আছে PyGame.
এরকম আরও অসংখ্য প্ল্যাটফর্মে পাইথনের দৃপ্ত পদচারণা বেড়েই চলেছে আর তাই বাংলাদেশের ডেভেলপারদের মধ্যে এই ভাষাটি ছড়িয়ে দিতে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
ওপেন সোর্স
এই বইটি মূলত স্বেচ্ছাশ্রমে লেখা এবং বইটি সম্পূর্ন ওপেন সোর্স । এখানে তাই আপনিও অবদান রাখতে পারেন লেখক হিসেবে । আপনার কন্ট্রিবিউশান গৃহীত হলে অবদানকারীদের তালিকায় আপনার নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে যাবে।
এটি মূলত একটি যেখানে এই বইয়ের আর্টিকেল গুলো মার্কডাউন ফরম্যাটে লেখা হচ্ছে । রিপোজিটরিটি ফর্ক করে পুল রিকুয়েস্ট পাঠানোর মাধ্যমে আপনারাও অবদান রাখতে পারেন । বিস্তারিত দেখতে পারেন এই ভিডিওতে Video
বর্তমানে বইটির কন্টেন্ট বিভিন্ন কন্ট্রিবিউটর এবং নানা রকম সোর্স থেকে সংগৃহীত এবং সংকলিত।
This work is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivatives 4.0 International License.
ইনস্টলেশন
আপনি যদি লিনাক্স বা ম্যাক ব্যবহারকারী হন তবে আপনার কম্পিউটারে পাইথন দেওয়াই থাকে। এই কোর্স লেখা পর্যন্ত (জুলাই ২০১৬) এই মেজর দুটি অপারেটিং সিস্টেমের সাথে যে পাইথন বিল্ট ইন অবস্থায় ডিফল্ট হিসেবে থাকে তার ভার্সন হচ্ছে Python 2.7.x
. কিন্তু, এই কোর্সটি লেখা হচ্ছে Python 3.5.x
এর উপর ভিত্তি করে। আসলে পাইথন ২ এবং ৩ ভার্সনের মধ্যে সিনট্যাক্স এবং ফিচার সম্পর্কিত বেশ কিছু মাঝারি মানের পরিবর্তন আছে। পাইথনের অফিসিয়াল সাইটে বর্তমানে পাইথন ৩ কেই বেশি ফোকাস করা হয়ে থাকে এবং তারা স্পষ্টই বলে দিয়েছে যে পাইথনের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ হচ্ছে পাইথন ৩
Python 2.x is legacy, Python 3.x is the present and future of the language
পাইথন ২ আর পাইথন ৩ এর পার্থক্য কি? পাইথনের এই দুটি প্রধান ভার্সনের মধ্যেকার পার্থক্য এবং আরও বিস্তারিত জানতে পড়া যেতে পারে অফিসিয়াল এই পোস্টটি
আমরা নিচে কিছু মেজর অপারেটিং সিস্টেমে পাইথন ৩ এর লেটেস্ট ভার্সন ইন্সটলেশনের ধাপ গুলো সম্বন্ধে জানবো। আগেই বলা হয়েছে, লিনাক্স বা ম্যাকে পাইথনের ২ ভার্সন বিল্ট-ইন অবস্থায় থাকে। তাই সরাসরি এই পাইথনের ইন্টারপ্রেটারকে চালু করতে হলে টার্মিনাল ওপেন করে কমান্ড লিখতে হবে,
এবং এন্টার চাপলেই পাইথন ২ এর ইন্টারপ্রেটার চালু হবে। কিন্তু আমরা এই ভার্সন নিয়ে যেহেতু কাজ করবো না তাই নিচের লেটেস্ট ভার্সন ইন্সটলেশনের দিকে মনোযোগ দেই।
লিনাক্স (উবুন্টু) উবুন্টুর লেটেস্ট ভার্সনে Python 3
কেও ইন্সটল্ড অবস্থায় দেখা যায় (যেমন Python 3.4.2) কিন্তু ডিফল্ট হিসেবে সেট করা থাকে না। অর্থাৎ, এই ভার্সনের ইন্টারপ্রেটার চালু করতে টার্মিনালে লিখতে হতে পারে python3
এবং এন্টার চাপতে হবে।
দুটি পাইথনের আলাদা আলাদা বাইনারি আলাদা নামে সেইভ থাকে এবং এদের পাথও দেখা যেতে পারে। টার্মিনালে যথাক্রমে
which python
এবংwhich python3
কমান্ড ইস্যু করলে যথাক্রমে/usr/bin/python
এবং/usr/local/bin/python3
দেখা যাবে। অর্থাৎ ডিফল্ট পাইথন এবং পাইথন 3.4 এর পাথ আলাদা।
যাই হোক, আমরা যদি আরও লেটেস্ট ভার্সনটিকে ইন্সটল করতে চাই তাহলে সরাসরি এই লিঙ্ক থেকে পাইথন 3.5.2 এর Gzipped source tarball ডাউনলোড করে সেটিকে Extract করে নিতে হবে। এতে করে কম্পিউটারে Python-3.5.2 নামের একটি ফোল্ডার তৈরি হবে।
এবার, টার্মিনাল ওপেন করে cd
কমান্ড ব্যবহার করে ওই ফোল্ডারের লোকেশনে যেতে হবে। যেমন,
এরপর নিচের কমান্ডটি দিতে হবে,
এখন নিচের কমান্ডটি দিন,
এরপর,
সব কিছু ভালোয় ভালোয় হয়ে গেলে টার্মিনাল ওপেন করে কমান্ড দিন,
নিচের মত আউটপুট আসবে,
অর্থাৎ Python 3.5.2 এর কনসোল বা REPL চালু হয়ে গেছে
এই নতুন পাইথনের লোকেশন জানতে
which python3.5
কমান্ড দিয়ে দেখতে পারেন যার আউটপুট আসতে পারে/usr/local/bin/python3.5
ম্যাক ওএসএক্স লিনাক্সের মত ম্যাকেও পাইথন ২ বিল্ট ইন অবস্থায় থাকে। পাইথনের লেটেস্ট ভার্সনটির .pkg ফরম্যাট ডাউনলোড করতে হবে এখানে থেকে.
এরপর ডাউনলোড করা ফাইলে ডাবল ক্লিক করে এবং স্ক্রিনে আগত তথ্য গুলো দেখে দেখে খুব সহজেই গ্রাফিক্যাল মুডে পাইথন ইন্সটল করা যায়।
ইন্সটলেশন কমপ্লিট হলে নতুন পাইথনের পাথ কে সিস্টেমের PATH এনভায়রনমেন্ট ভ্যারিয়েবলে যুক্ত করে নিতে হবে। এ জন্য আপনার ব্যবহৃত শেল প্রোগ্রামের উপর ভিত্তি করে ~/.profile
, .zshrc
, অথবা ~/.bash_profile
ফাইলকে এডিট করে নিচের লাইনটি জুড়ে দিন।
এখন নতুন একটি টার্মিনাল উইন্ডো ওপেন করে কমান্ড দিন,
নিচের মত আউটপুট তথা REPL চালু হলে ধরে নেয়া যায় পাইথনের লেটেস্ট ভার্সন ইন্সটল হয়েছে,
ম্যাকে পাইথন ইন্সটল করার সাথে সাথে একটি IDLE (Integrated Development Environment) -ও ইন্সটল হয়ে যায় যেটা আসলে টার্মিনালের পাইথন REPL (read–eval–print loop) এর মতই কাজ করে কিন্তু বিশেষভাবে পাইথন প্রোগ্রামিং এর জন্যই তৈরি। অ্যাপ লিস্ট থেকে এই নতুন ইন্সটল হওয়া REPL কে খুঁজে চালু করা যাবে।
সাবধানতা যেহেতু লিনাক্স ও ম্যাকে পাইথন ২ এর বাইনারি বিল্ট-ইন থাকে এবং আলাদাভাবে ইন্সটল করা পাইথন এর বাইনারির নাম সাধারণত python3.4
বা python3.5
হয়ে থাকে; তো অনেকেই নতুন ইন্সটল করা পাইথন বাইনারির নাম বদলে বা সিম্বোলিক লিঙ্ক তৈরি করে python
করে থাকেন যাতে করে টার্মিনালে python
কমান্ড এক্সিকিউট করলেই পাইথন ৩ এর ইন্টারপ্রেটার চালু হয়। এই কাজটি করা একদম উচিৎ না। কারণ লিনাক্স বা ম্যাকে কিছু টুলস এবং প্রোগ্রাম থাকে যেগুলো
ওই সিস্টেমের পাইথন এর উপরেই নির্ভর করে। এখন যখন আপনি পাইথন ৩ এর নাম বদলে শুধু পাইথন করে দিবেন, তারপর থেকে ওই সিস্টেম প্রোগ্রাম গুলো হয়তো সঠিক ভাবে কাজ করবে না। কারন তারা পাইথন ২ এর ইন্টারপ্রেটার কে চেনে পাইথন নামে।
এসব ছোট জটিলতা সমাধান করা যায় ভার্চুয়াল এনভায়রনমেন্ট তৈরির মাধ্যমে যা কোর্সের শেষের দিকে আলোচনা করা হবে।
উইন্ডোজ এই অপারেটিং সিস্টেমে বিল্ট-ইন পাইথন না থাকায় অবশ্যই আলাদা ভাবে ইন্সটল করে নিতে হবে। প্রথমে এখান থেকে ৬৪ বিট উইন্ডোজের জন্য অথবা এখান থেকে ৩২ বিট উইন্ডোজের জন্য ইন্সটলার ডাউনলোড করে নিন। ম্যাক এর ইন্সটলারের মতই উইন্ডোজ এর জন্য ইন্সটলারটিও গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেস ভিত্তিক অর্থাৎ, মাউস এর কয়েকটি ক্লিক দিয়েই পাইথন ইন্সটল করে নিতে পারেন।
ইন্সটলারটি ওপেন হলে ‘customize installation’ সিলেক্ট করুন। তারপরে ‘Optional features’ স্ক্রিনে সবগুলো চেকবক্সই সিলেক্টেড রেখে দিতে পারেন। তারপরে ‘Advanced option’ স্ক্রিন থেকে প্রয়োজনীয় চেকবক্সগুলো সিলেক্ট করে দিন (বিশেষ করে ‘Install for all users’, ‘Add python to environment variables’ এবং ‘Precompile standard library’)।
এখান থেকে আপনি পাইথনের ইন্সটলেশন লোকেশনও চেঞ্জ করে দিতে পারেন। সাধারণত সবাই ইন্সটলেশন লোকেশন হিসেবে C:\Python3x
ব্যবহার করে থাকে। এরপরে ‘Install’ বাটন চেপে ইন্সটলেশন কমপ্লিট করুন।
এই ইন্সটলেশনেও একটি গ্রাফিক্যাল পাইথন কনসোল প্রোগ্রাম ইন্সটল হয়ে যায় যাকে আমরা IDLE বলছি। Start মেনু থেকে All Programs এর মধ্যে Python 3.5 নামক ফোল্ডারের মধ্যে IDLE নামের প্রোগ্রামটি থাকবে যেখান থেকে একে চালু করা যেতে পারে।
যদি আপনি উপরের মত করে ইন্সটলেশনে ‘Add python to environment variables’ অপশন সিলেক্ট করে থাকেন তাহলে আপনি উইন্ডোজের ডিফল্ট কমান্ড প্রম্পট প্রোগ্রামের মধ্যেই পাইথন ইন্টারপ্রেটার ব্যবহার করতে পারবেন (লিনাক্স বা ম্যাকের টার্মিনালের মত করে)।
আর যদি না করে থাকেন তাহলে পাইথন ডিরেক্টরীকে সিস্টেম পাথে যোগ করে নিন । অর্থাৎ C:\Python3x
(ধরে নিচ্ছি আপনার পাইথন ইন্সটলেশন সি ড্রাইভের মধ্যেই করেছেন) এই লোকেশনটিকে আপনার PATH
ভ্যারিয়েবলে যোগ করে নিন।
নীচের মত করেঃ
-
My Computer
এর উপর রাইট ক্লিক করেProperties
এ যান । -
বাম পাশে
Advanced System Settings
এ ক্লিক করূন । -
নিচের দিকে থাকা
Environment Variables
এ ক্লিক করুন । -
System Variables
এর ভিতরেPATH
এন্ট্রি খুজে বের করেEdit
বাটন চাপুন । -
এবার এর শেষে
C:\Python3x;
লিখেOK
করে বের হয়ে আসুন । -
কমান্ড প্রম্পট চালু করুন (cmd.exe) । টাইপ করুনঃ
python
। এন্টার চাপুন ।
কমান্ড প্রম্পট এর কালো পর্দায় নিচের মত লেখা দেখাবেঃ
এরকম দেখালে বোঝা গেল আমরা পাইথন ইন্সটলেশন শেষে এটাকে রান করাতে পেরেছি কমান্ড লাইনে।
প্রথম প্রোগ্রাম উপরের যেকোনো একটি মাধ্যমে যদি কোন ভাবে আপনি পাইথন কনসোল ওপেন করে থাকেন তাহলে নিচের লাইনটি সেখানে লিখুন এবং এন্টার চাপুন,
তাহলে তারপরের লাইনেই আউটপুট পাবেন নিচের মত,
>>
চিহ্নটির মানে হচ্ছে পাইথন ইন্টারপ্রেটার আপনার কাছে পাইথন স্টেটমেন্ট নেয়ার জন্য প্রস্তুত এবং এখানেই আপনি লিখতে পারবেন।
- আজ তাহলে এই পর্যন্তই। খুব শীগ্রই দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হবো ।
The post পাইথন শিখি হতে কলমে || পর্ব ০১: পরিচিতি ও ইনস্টলেশন appeared first on Trickbd.com.
0 comments: