অআসসালামু আলাইকুম!
আশা করি সবাই ভালো আছেন।
#TrickBDCompetition
একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের উপর ৫ ওয়াক্ত নামায ফরজ করা হয়েছে।
|
নারি ও পুরুষ উভয়ের সলাত আদায়ের সহিহ পদ্ধতি |
আমরা জানি,
নামায বেহেশতের চাবি
কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেয় আছেন যারা নামাযের সঠিক নিয়ম জানি না।
আমরা জানি চাবি ছাড়া যেমন তালা খোলা যায়না,তেমনি নামায ছাড়া আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো না।তবে শুধু নামায আদায় করলেয় হবে না তা হতে হবে সহিহ ও শুদ্ধ।
আমরা যারা C Programming জানি তারা অব্যশ্যয় জানি “;” এর গুরুত্ব কতটুকু।
Infact Programming তে কোন ক্যারেক্টার ভুল হলেও সে প্রোগ্রাম টি কাজ করে না, তেমনি নামাযের কোন একটি কাজ বাদ পড়লে বা সঠিক ভাবে না করলে তা কবুল হবে না।
অনেক কথা হলো এখন আসি মুল কাজে।
নারি ও পুরুষ উভয়ের সলাত আদায়ের সহিহ পদ্ধতি-
____________________________________________
১- বড় পবিত্রতা বা ফরয গোসলের পূর্বে অযু করতে হবে তারপর আর ওজু না ভাঙলে ফরয গোসলের পরে নতুন করে অযু করার দরকার নেই ।(বুখারী হাদীস নং ২৪৮- পৃষ্ঠা ১৩৪)
২- ছোট পবিত্রতা বা অযুর সময় ঘাড় মাসাহ করা যাবে না, মাথা মাসাহ করতে হবে ১বার এবং তার পদ্ধতি হচ্ছে ২হাতকে মাথার সামনে থেকে পিছনে নিয়ে যেতে হবে এবং পিছন থেকে সামনে আনতে হবে তারপর ২তর্জনী আঙ্গুল ২কানের ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং তারপর কানের ছিদ্রের উপরের ভাজ তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে এবং শেষে ২বৃদ্ধাঙ্গুল দারা ২কানের পিছনে মূছে দিতে হবে। অন্যান্য অঙ্গগুলো ৩বার করে ধুতে হবে এবং হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলোর মধ্যে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে ভালকরে খিলাল করে পরিষ্কার করতে হবে। মুখে পানি নিয়ে গড়গড়া করতে হবে এবং নাকে পানি নেওয়ার সময় পানি নাকের মধ্যে টেনে নিতে হবে তারপর নাক ঝেরে ফেলতে হবে।(বুখারী হাদীস নং ১৬৪-১৬৫-পৃষ্ঠা ৯৭-৯৮)
৩- স্বলাতে দাড়িয়ে অন্তরে নিয়ত করতে হবে কিন্তু মুখে পড়তে হবে না(কোন ব্যক্তি স্বলাত আদায় করবে বলেই সে স্বলাতে দাড়িয়েছে, এটাই তার নিয়ত। সে যদি স্বলাতের নিয়ত না করতো তবে সে অযুও করতো না এবং স্বলাতেও দাঁড়াতো না আর সবচেয়ে বড় কথা মুখে নিয়ত করার কোন প্রমাণ নেই সুতরাং একাজ বিদয়াত)।(বুখারী ৭৯৩, ৮০৩ -পৃষ্ঠা ৩৮৫, ৩৯০)
ফজর বা যোহর বা আসরের ফরজ সলাত বা সুন্নাত সলাত আদায় করছি মনে মনে এই সংকল্প করে আল্লাহু আকবার দিয়ে সলাত আরম্ভ করবে।
৪- তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ আল্ল-হু আকবার বলে কাধ বরাবর বা কাঁন বরাবর হাত উঠিয়ে(তবে কাঁন বা কাঁনের লতি স্পর্শ করতে হবে না) বুকে হাত বাধতে হবে।(নাসাঈ ১১০২- পৃষ্ঠা ৩৫৩, বুখারী ৭৩৮, ৭৪০ – পৃষ্ঠা ৩৫৪, ৩৫৭। আবু দাউদ ৭৫৯ – পৃষ্ঠা ৫১০)
৫- স্বলাতের কাতারে একে অন্যের পায়ের সাথে পা এবং কাধের সাথে কাধ মিলীয়ে দাড়াতে হবে অর্থাৎ একে অন্যের মাঝে কোন ফাকা রাখা যাবে না।(বুখারী হাদীস নং ৭২৫ – পৃষ্ঠা ৩৪৯)
৬- স্বলাতে দাড়িয়ে কোন কাজ ইমামের আগে বা ইমামের সাথে সাথে করা যাবে না বরং ইমাম করার পর করতে হবে।(বুখারী হাদীস নং ৬৮৯, ৬৯১ – পৃষ্ঠা ৩৩৩-৩৩৪)
৭- একাকী বা ইমামের পিছনে, সরবে কিরাত বা নিরবে কিরাত সর্বোবস্থায় সবাইকে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।(মুসলিম হাদিস নং ৭৬৪, বুখারী হাদীস নং ৭৫৬ – পৃষ্ঠা ৩৬৭, তিরমিযী ৩১১ – পৃষ্ঠা ২৭৪)
৮- সরবে কিরাতের স্বলাতে সূরা ফাতিহা শেষে ইমামের সাথে জোরে আমীন বলতে হবে এবং নিরবে কিরাতের স্বলাতে সূরা ফাতিহা শেষে নিরবে আমীন বলতে হবে।(বুখারী ৭৮০ – পৃষ্ঠা ৩৭৮)
৯- রুকু করার আগে রফউল ইয়াদাইন করতে হবে(২হাতকে প্রথম তাকবীরে তাহরীমায় উঠানোর মতো কাধ বরাবর বা কাঁন বরাবর ঊঠাতে হবে)।(বুখারী হাদীস ৭৩৫-পৃষ্ঠা ৩৫৩, মুসলিম ৭৪৭ পৃষ্ঠা-৩৭৫)
১০- রুকু করার সময় পিঠ একেবারে সোজা করতে হবে।(বুখারী হাদীস নং ৭৯১, ৭৯৩ – পৃষ্ঠা ৩৮৪-৩৮৫)
১১- রুকু থেকে উঠে রফউল ইয়াদাইন করতে হবে এবং ধীর-স্থিরতার সাথে অবশ্যই সোজা হয়ে দাড়াতে হবে নইলে স্বলাত হবে না।(বুখারী হাদীস নং ৭৩৫,। ৮০০ – পৃষ্ঠা ৩৫৩,। ৩৮৮)
১২- সেজদায় যাওয়ার সময় আগে ২ হাত মাটিতে রাখতে হবে, অবশ্য হাঁটু আগে রাখলেও চলে।(আবু দাউদ ৮৪০ – পৃষ্ঠা ৫৭৯)
১৩- সেজদার সময় ২পা মিলে যাবে, ২হাত মাটীতে কাধ বরাবর বা কাঁন বরাবর থাকবে, আঙ্গুলের মাঝে কোন ফাকা থাকবে না। ২হাতের বাহুকে কুকুরের মতো মাটীতে বিছিয়ে দেওয়া যাবে না এবং হাতকে পেট এবং পা থেকে এতোটা দূরে রাখতে হবে যাতে পেটের নিচ দিয়ে ১টা ছাগলের বাচ্চা যাওয়ার মতো জায়গা থাকে।(বুখারী ৮২২, ৮০৭ – পৃষ্ঠা ৪০০, ৩৯৪, মুসলিম ৯৯৪ – পৃষ্ঠা ৪৬৩, নাসাঈ ১১০২- পৃষ্ঠা ৩৫৩, সহীহ্ ইবনে খুযাইমা)
১৪- রুকু এবং সেজদা ধীর-স্থিরতার সাথে করতে হবে। কাঁকের মতো দ্রুত ঠোকর মারলে স্বলাত হবে না।(বুখারী হাদীস নং ৭৯১, ৭৯৩ – পৃষ্ঠা ৩৮৪-৩৮৫)
১৫- সেজদাতে কপালের সাথে নাকও অবশ্যই মাটীতে রাখতে হবে, নাক উপরে উঠে গেলে হবে না।(বুখারী হাদীস নং ৮১২ – পৃষ্ঠা ৩৯৬, আবু দাউদ ৮৯৪ – পৃষ্ঠা ৩২)
১৬- প্রথম সেজদা থেকে উঠে সোজা হয়ে বসতে হবে এবং এ সময় পঠনীয় যে দোয়া রয়েছে (রব্বিগফিরলি রব্বিগফিরলি) তা অবশ্যই বলতে হবে।(বুখারী হাদীস নং ৮০১ – পৃষ্ঠা ৩৮৮.। আবু দাউদ ৮৫০, ৮৭৪ – পৃষ্ঠা ৫)
১৭- স্বলাতের মধ্যে ১ বা ৩ রাকাতের সময় দ্বিতীয় সেজদা শেষে কিছুসময় বসতে হবে তারপর ২ হাত জমিনের উপর ভর করে উঠতে হবে।(বুখারী হাদীস নং ৮২৪ – পৃষ্ঠা ৪০১)
১৮- স্বলাত যদি ২ রাকাতের বেশী হয় তবে ২য় রাকাতের বৈঠক শেষ করে উঠে আবার রফউল ইয়াদাইন করতে হবে।(বুখারী হাদীস নং ৭৩৯ – পৃষ্ঠা ৩৫৫)
১৯- ২ রাকাতের বেশী স্বলাতের ক্ষেত্রে শেষ বৈঠকে তাওয়াররুক করতে হবে অর্থাৎ ডান পা খাড়া রেখে বাম পাকে ডান পায়ের ভীতরে ঢুকিয়ে নিতম্বের উপর বসতে হবে।(বুখারী হাদীস ৮২৮ – পৃষ্ঠা ৪০৩)
২০- তাশাহুদের বৈঠকে সবসময় তর্জনী আঙ্গুল নাড়াতে হবে এবং চোখ তর্জনী আঙ্গুলের দিকে থাকবে।(মিশকাত ৯১৩ – পৃষ্ঠা ৫৩৯, নাসাঈ ১১৬০, ১১৫৯ – পৃষ্ঠা ৩৭০, মুসলিম ১১৯৬-১১৯৮ – পৃষ্ঠা ৫৫, তিরমিযী ২৯৪, ৩৫৫৭ – পৃষ্ঠা ২৫৭, ৪১৪)
২১- পুরো স্বলাতের সময় চোখ সেজদার জায়গায় রাখতে হবে শুধু তাশাহুদের বৈঠকে চোখ তর্জনী আঙ্গুলের দিকে রাখতে হবে। (বাইহাকী, হাকেম)
২২- সালাম দিয়ে স্বলাত শেষ হয়ে যাবে।(বুখারী হাদীস নং ৮৩৭ – পৃষ্ঠা ৪০৮, মুসলিম ৯৯৭ – পৃষ্ঠা ৪৬৪)
২৩- সলাতের পদ্ধতিতে নারি এবং পুরুষের কোন পার্থক্য নেই, সলাত আদায়ের পদ্ধতি উভয়ের জন্য একই রকম। (বুখারি হাদিস ৬৩১)
(তাওহিদ পাব্লিকেসনের থেকে হাদিসের নাম্বার মিলিয়ে দেখতে পারেন)
কতটা ভালোভাবে বুঝাতে পেরেছি জানি না।
কোন ভুল বা এর চেয়ে শক্তিশালী সহিহ দলিল পেলে জানাতে ভুলবেন না।
আল্লাহ আমাদের সঠিক জনার আর সে অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন।
ইসলামিক আপডেট পেতে যুক্ত হোন ঃ
ফেসবুকঃMission Peace
প্রথম প্রকাশিত হয়েছেঃ Peace Dairy